অাজকে অামাদের বনানী অফিসে সব মেম্বাদের নিয়ে মিটিং হয়।।।অামাদের অাজকের অালোচ্য বিষয় ছিল তরুন প্রজন্ম।পোস্টটি লিখেছেনঃ আফরোজা আঁখি
কেউ সুইসাইড করার পর সবার খুব টনক নড়ে।
নিউজপেপার এর কাটতি বাড়ে, হেডলাইন আসে “অমুক মেডিকেলের তমুক মেধাবী ছাত্র/ ছাত্রীর আত্নহত্যা” , বিভিন্ন গ্রুপে গ্রুপে বুজুর্গ ব্যক্তিরা দফায় দফায় আলোচনা করেন, মেডিকেলের পড়াশোনার চৌদ্দগুষ্ঠী উদ্ধার করেন, টিভি তে টক শো চলে তরুন প্রজন্মের অবক্ষয় আর হতাশা নিয়ে খুব বড় বড় লেকচার দেয়া হয়, সবাই জ্ঞান দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কিন্তু নিজেরা ই জানে না কোন না কোন দিক দিয়ে সে নিজেও কারো ডিপ্রেশন এর কারণ কিংবা সুইসাইড এর কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কি না।
আমরা কেবল নিজের জায়গা থেকে অন্যের অবস্থান বিচার করি, কখনো তার জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেখি না কেন ডিপ্রেশন এ পড়ল, কেন সুইসাইড করল!! এত খোঁজাখুঁজি করি কিন্তু কারণ আর খুঁজে পাই না। আমরা কি আসলেই কারণ গুলো ভালমত খুঁজি? খুঁজলে হয়ত পেয়ে যেতাম যে আশেপাশের মানুষ আর পরিস্থিতি ই আসল খুনি। অথচ এর নাম হয় আত্নহত্যা!!! কি হাস্যকর।
যে মেয়েটা কিংবা ছেলে টা আগে অনেক চঞ্চল ছিল, সারাক্ষন হাসত, আড্ডায় সবাইকে মাতিয়ে রাখত সে এখন কেন এত চুপচাপ হয়ে গেল, কেন আর আগের মত হাসে না, ভাল্লাগে না বলে সব কিছুকে এড়িয়ে চলে, কোথাও যেতে চায় না, সেই কারণ গুলো কি আমরা কখনো ভেবে দেখেছি?? যে মানুষ টা অল্প কিছুদিন আগেও অবুঝ ছিল সে কি কারণে হঠাত এমন ম্যাচিউর হয়ে গেল সে ই খোজ ও আমরা রাখি না। উলটা মানুষের খারাপ সময়কে আমরা ও আরো খারাপ বানিয়ে দেই। তার দুর্বলতায় আমরা মজা নেই, হাসাহাসি করি, তার নামে আড়ালে দুই টা বাজে কথা ছড়িয়ে পৈশাচিক আনন্দ পাই। অথচ নিজের ভেতরের খুনি টাকেই কেউ চিনতে পারি না।
সবাই সুইসাইড কারীকে গালি দেই, জাহান্নামী বলি অথচ উচিত ছিল দায়ী দের নাম লিখে যাওয়া। তাহলে দেখা যেত সেই লিস্টে কত জনের নাম উঠে গেছে! এখনো সময় আছে, একবার ভাবি নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি- “আমি কারো ডিপ্রেশন এর কারণ না তো?!!”
হয়ত বলার অনেক কথা ছিল কিন্তু শোনার মত কেউ ছিল না, চোখে অনেক হতাশা ছিল কিন্তু মাথায় হাত দিয়ে কেউ বলে নাই “আরে ওমন হয়। ওসব কিচ্ছু না” বুকে অনেক জমাট কষ্ট ছিল কিন্তু কেউ জড়ায়ে ধরে বলে নাই “সব ঠিক হয়ে যাবে”। তাই দিনশেষে দায় পড়ে “সিজোফ্রেনিয়ার ” কারণ আমরা কেউ দায়ী হয়েও দায় নিতে চাই না।
তারপর কেউ কেউ মরে গিয়ে বেচে যায়, আবার কেউ কেউ জীবিত থেকেও মরে যায়।
এভাবেই চলতে থাকে……
Leave a reply